Traveling
ভ্রমন
এটি আপনাকে নির্বাক করে তোলে, তারপর আপনাকে গল্পাকারে পরিনত করে। ভ্রমন জ্ঞানের জগতকে প্রসিদ্ধ করতে সাহায্য করে এবং অজ্ঞতা হালকা করিয়া অন্ধকারকে দূরে ঠেলে দেয়।
সমগ্র কোরআনে জীবনকে একটি যাত্রা হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে। ( উদাহরণ: ৬:১২২, ১৩:১৬, ২৪:৩৫) তবে, এই আধ্যাতিক যাত্রার অসংখ্য উল্লেখের পাশাপাশি শারীরিক ভ্রমনের দিকেও বিশেষ জোর দেয়া হয়েছে। ভ্রমনের মাধ্যমে ভৌগলিক এবং জ্যোতির্বিদ্যা সংক্রান্ত তথ্যের পাশাপাশি নটিক্যাল, অ্যারোনটিক্যাল এবং অ্যাস্ট্রোনটিক্যাল জ্ঞানের চাহিদা রয়েছে। যেহেতু, প্রাকৃতিক অবজেক্ট সম্পর্কে বৈজ্ঞানিক তথ্য মানুষের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন করে এবং মানুষিক শক্তিকে বৃদ্ধি করে। তাই এগুলো কোরানে পথনিদের্শক এবং দিক নির্দেশক হিসাবে বর্নণা করা হয়েছে।
Óতিনি তোমাদের জন্য নক্ষত্র স্থাপন করেছেন , যাতে তোমরা তাদের দ্বারা স্থল এবং সমূদ্রের অন্ধকারে পথ খুজে পাও। জ্ঞানসম্পন্ন লোকদের জন্য আমি তো বিশদভাবে বর্ণনা করিয়াছি। তিনিই আল্লাহ যিনি তোমাদের কল্যানের জন্য সমূদ্রকে বশীভ‚ত করেছেন,যাহাতে তাঁর আদেশে জাহাজসমূহ চলাচল করে এবং যাহাতে তোমরা তাহার অনুগ্রহ অনুসন্ধান করিতে পার এবং তোমরা তাঁর প্রতি কৃজ্ঞতা প্রকাশ কর।Ó(৬:৯৭, ৪৫:১২)
এখানে একটু চিন্তা করুন, আকাশের তারকা দেখে সাগরের নাবিকগন দিক নির্নয় করতে পারেন।
আল্লাহ তায়ালা আরো বলেন ” আর তিনিই সমূদ্রকে অধীন করে দিয়েছে, যাহাতে উহা হইতে তাজা মৎস আহরন করতে পার এবং যাহাতে আহরন করতে পার রত্বনাবলী, যা ভূষণরুপে পরিধান কর এবং তোমরা দেখিতে পাও উহার বুক চিরিয়া নৌযান চলাচল করে এবং উহা এইজন্য যে, যাহাতে তোমরা তাহার অনুগ্রহ সন্ধান করিতে পার এবং তোমরা যেন কৃজ্ঞতা প্রকাশ করিতে পার। তিনি পৃথিবীতে সুদৃঢ় পর্বতমালা স্থাপন করেছেন যাতে তোমাদেরকে লইয়া আন্দোলিত না হয় এবং নদী ও পথ অবধি প্রবাহিত করে যাতে তোমরা তোমাদের গন্তব্যস্থলে পৌছাতে পার”। ( ১৬:১৪-১৬ )
আমরা জানি যে, একমাত্র সাগর থেকে যত মাছ আহরণ করা যায় তা অন্য কোথাও থেকে ততো মাছ আহরণ করা যায় না। আবার সাগর থেকেই মণি-মুক্তা পাওয়া যায়। আবার একই সাগরে দুই রবম পানি দেখা যায়। পৃথিবীতে অনেক পাহাড় রয়েছে যেগুলোর আকৃতি বিশাল। আমরা ভ্রমন করলেই সেগুলো দেখতে পারব।
মহান আল্লাহ বলেন-”দরিয়া দুইটির একরূপ নয়; একটির পানি সুমিষ্ট; অপরটির পানি লোনা ও খর। প্রত্যেকটি হইতে তোমরা তাজা গোস্ত আহার কর। আহরণ কর অলংকার যাহা তোমরা পরিধান কর এবং তোমরা দেখ উহার বুক চিরিয়া নৌযান চলাচল করে ,যাহাতে তোমরা তাঁহার অনুগ্রহ সন্ধান করিতে পার এবং তোমরা যেন কৃজ্ঞতা প্রকাশ করিতে পার।
”তিনি তোমাদের জন্য পৃথিবীকে করেছেন বিছানা এবং তাতে তোমাদের জন্য পথ বের করেছেন।”(৩৫:১২,২০:৫৩)
আল-কোরআন ভ্রমণকে র্তীথ হিসেবে প্রচার করে , যেহেতু ভ্রমনের সময় চারপাশের পরিবেশ এক আল্লাহর একত্ব ও মহানত্বকে ঘোষণা করে। যেমন: ( ৪৫:৩, ১০:৬)
”আপনি কি সমূদ্রের মধ্য দিয়ে জাহাজগুলি এক আল্লাহর বিধানগুলি বহন করে তা দেখেন নি , যাহাতে তিনি আপনাকে তাঁর আশ্চর্য কিছু দেখান? আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে অনেক নিদর্শন রয়েছে , তাহারা এইসমস্ত প্রতক্ষ্য করে কিন্তু তাহারা এই সকলের প্রতি উদাসীন। তারা কি পৃথিবীতে ভ্রমন করে নাই? তাহা হইলে তাদের মন জ্ঞান অর্জন করতে পারে এবং তাদের কানগুলি শুনতে শিখত এবং অবশ্যই এইটি চোখ নয় যা অন্ধ বরং অন্ধ হইতেছে তাদের বক্ষস্থিত অন্তর। (৩১:৩১, ১২:১০,২২:৪৬)
নতুন তথ্য এবং অভিজ্ঞতা ভিত্তিক জ্ঞান সন্ধান করা এবং এর দ্বারা জ্ঞান অর্জনের জন্য পৃথিবীতে আমাদের ভ্রমণ করা উচিত।
ব্যবসা-বানিজ্যের জন্য ভ্রমন
পবিত্র কোরানে ব্যবসা-বানিজ্যের ভ্রমন করার প্রতি উৎসাহ দেয়া হয়েছে , যা পন্য আমদানি-রপ্তানির মাধ্যমে পারস্পারিক মুনাফা অর্জনের পাশাপাশি পারস্পারিক ভ্রাতৃত্ব গড়ে উঠে।
আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ আর তোমরা আমার ইবাদতের পর পৃথিবীতে ছড়াইয়া পড়িবে এবং যাহাতে আল্লাহর অনূগ্রহ অনুসন্ধান করিতে পার এবং আল্লাহকে অধিক পরিমানে স্মরণ করিবে , যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার।” আর তোমাদের রক্ষাকারী তিনিই যিনি তোমাদের জন্য সমূদ্রের দিয়ে জাহাজ চালিয়ে দেন, যাতে তোমরা তাঁর অনুগ্রহ কিছুটা সন্ধান করিতে পার, নিশ্চয়ই তিনি তোমাদের প্রতি পরম করুনাময়।”(৬২:১০, ১৭:১০)
নতুন দিগন্তের অন্বেষণে ভ্রমন
ভ্রমনের জন্য আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হইল, নতুন নতুন অঞ্চল আবিষ্কার করা অথবা নতুন দিগন্তের অন্বেষণ করা। আর ভ্রমনের মাধ্যমেই আবিষ্কার হয়েছে অনেক নতুন দেশ, দ্বীপ , উপদ্বীপ।
বিনোদনের জন্য ভ্রমন
আল্লাহ তায়ালা বলেন- তিনিই আল্লাহ যিনি তোমাদেরকে স্থল এবং জলে ভ্রমন করান; তোমরা যখন জাহাজে উপস্থিত হও এবং এইগুলি আরহী লইয়া অনুক‚ল বাতাসে বহিয়া যায় এবং তাহারা উহাতে আনন্দিত হয়। তোমাদের জন্য সমূদ্রের শিকার ও উহা ভক্ষণ হালাল করা হয়েছে; তোমাদের ও পর্যটকদের জন্য।”(১০:২২, ৫:৯৬)
অবশেষে বলা যায়, ভ্রমন করলে শুধু শারীরিক উপকারই হয় না বরং মানষিক উপকার হয়। ভ্রমন করলে মানষিক অশান্তি দূরীভুত হয়।




0 Comments